পাক-ভারত যুদ্ধের কোন প্রভাব পড়েনি দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরে। আমদানি-রপ্তানির পাশাপাশি পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে বিএসএফ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। সীমান্তে সন্দেহজনক লোকজনকে তল্লাশি করছে বলে জানা গেছে।
যদিও ভারত-পাকিস্তান প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়নে যেকোন মুহূর্তে যুদ্ধে রূপ নিতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য বড় শঙ্কার কারণ না হলেও ব্যাপারটা বড় উদ্বেগের। তবে ব্যবসায়ীমহল মনে করেন এ সীমান্তে যুদ্ধের প্রভাব পড়ার কোন কারণ নেই।
বুধবার (৭ মে ) সকাল সাড়ে ছয়টার সময় যথারীতি দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী যাতায়াত এবং সকাল নয়টা থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে অন্যান্য দিনের ন্যায় আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ও স্বাভাবিক রয়েছে। সকাল থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত প্রায় ২০০ পাসপোর্টধারী যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছে এবং সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত প্রায় ২৩০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি হয়েছে।
ভারত থেকে আসা কয়েকজন যাত্রী জানান, ওপারে বিএসএফ নজরদারি বাড়িয়েছে। ভারতে আসা ও যাওয়ার পথে যাত্রীদের ব্যাগেজ তল্লাশির পাশাপাশি সন্দেজনক লোকজনের দেহ তল্লাশি করছে।
এদিকে বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ও কাস্টমসে লিংক সার্ভিস (অনলাইন সিস্টেম) কাজ না করায় বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি বিঘ্নিত হচ্ছে। গত ৩ মে ১৫০ ট্রাক ও ৪ মে ৩৪ ট্রাক পণ্য আমদানি হলেও ৫ মে ৩৩২ ট্রাক ও ৬ মে ৪৩১ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে। অপরদিকে বেনাপোল বন্দর থেকে ৩ মে থেকে ৬ মে পর্যন্ত চার দিনে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৫৯৬ ট্রাক পণ্য।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, পেট্রাপোল শুল্ক দফতরের সার্ভারে সমস্যার কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দফতরে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। ফলে ২৮ এপ্রিল থেকে পেট্রাপোলের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর দিয়ে আমদানি রফতানি কমে গিয়েছে। এতে করে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। ফলে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণকে মেইল করে সমস্যা সমাধানের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শনিবার (৩ মে) থেকে শুধু পচনশীল পণ্য ছাড়া আর কিছু রফতানির অনলাইন হচ্ছে না। ট্যাবের মাধ্যমে কোনও রকমে তা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন জানান, ভারত বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য এবং দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২০০ যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছে।
বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, বুধবার (৭ মে) সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত প্রায় ২৩০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি হয়েছে। তবে পেট্রাপোল বন্দরে ইন্টারনেট লিঙ্ক না থাকায় তারা অনলাইন সিস্টেমে কাজ করতে পারছেন না। অনলাইনের বিকল্প হিসেবে ট্যাবে ওয়াইফাই কানেকশন দিয়ে নামমাত্র কার্যক্রম চালু রেখেছে পেট্রাপোল কাস্টমস। এখন যে পণ্যবাহী ট্রাক ভারত থেকে আসছে সে গুলো আগের অনলাইনে এন্ট্রি করা পণ্য। বর্তমানে অনলাইনে সামান্য পরিমাণ আমদানি পণ্য এন্ট্রি করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস